ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিচ্ছে ‘হেলপ কক্সবাজার’: নির্বাহী পরিচালকের পরিদর্শন

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় উখিয়া ও রামু উপজেলায় স্বাবলম্বী ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এসডিপি প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে স্কুল ঝরে পড়া একশো যুবক-যুবতী।

০৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সরেজমিনে উক্ত প্রকল্পের কার্যক্রমের ২০টি ট্রেড পরিদর্শন করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

এসময় তিনি কম্পিউটার, মোবাইল ফোন সার্ভিসিং এবং ট্রেইলারিং ট্রেডের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের উৎসাহিত করেন।

পরিদর্শন শেষে স্কুল ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, যারা মাধ্যমিক শিক্ষাচক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে এসডিসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ সকল ছেলেমেয়েরা যেন বেকার না থাকে এবং নিজের কর্মসংস্থান নিজেই করতে পারে এই সুযোগ তৈরী করে দেওয়ার জন্য এসডিসিকে ধন্যবাদ। এই অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।

তাই ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষায় দ্বিতীয় সুযোগ প্রদান করা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কুল ঝরে পড়া ও যারা সাধারণ শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত না তারা যাতে নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেই প্রচেষ্টা করা হবে এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে। কেউ যাতে বেকার ঘরে বসে না থাকে, ঘরের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন উপার্জনমুখী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন হেলপ কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়া তারুণ্যের একটি বড় অংশ বেকার থাকলেও, ভারতীয়, শ্রীলঙ্কাসহ বিদেশি কর্মীরা কাজ করছেন। কেননা, কাজের জন্য যে দক্ষতা প্রয়োজন, বাংলাদেশি তরুণদের অনেকের মাঝে তা নেই। তাই চাহিদানুযায়ী দক্ষ কর্মী হতে এ প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

সুতরাং এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আধুনিক বিশ্বে, বৈজ্ঞানিক যুগে, দক্ষতানির্ভর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ঠিক কতটা। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকেই ঝরে পড়তে হয়, কিংবা কাঙ্ক্ষিত সাফল্যবঞ্চিত হতে হয় সঠিক দক্ষতার অভাবে। তাই ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও এ সত্য উপলব্ধি করে মেনে নিতে হবে যে, বর্তমান সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বাজারে দক্ষতা ছাড়া কোনোভাবেই টিকে থাকা যাবে না।

সর্বমহল যদি একই সাথে দক্ষতার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করে নিতে পারে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। পাশাপাশি দেশেও গড়ে উঠবে দক্ষ জনশক্তি, ফলে ঘুচে যাবে বেকারত্বের অভিশাপ।

তিনি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ প্রকল্পের ১৪ থেকে ১৮ বয়সের স্কুল ঝড়ে পড়া ছেলে মেয়ে কারিগরি শিক্ষার আওতায় এনে তাদের জন্য উপার্জনের পথ তৈরি করা হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, হতদরিদ্র ও এতিম পরিবারের সন্তান এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভাতা এবং শিক্ষা প্রদানের জন্যও ভাতা রাখা হয়েছে। ছয় মাস প্রশিক্ষণের পর তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে তারা বিনামূল্যে এ প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারে।

এসময় তিনি কাজের অগ্রগতি, স্থায়ীত্বশীলতা, ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করেন।

নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন যাতে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যায় এবং প্রতিটি প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন দক্ষ হয়ে ওঠে।

উক্ত প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা জানান, হেলপ কক্সবাজার’র সহযোগীতায় এসডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিতে পেরে তারা খুবই খুশি। তারা দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় এ প্রকল্প না থাকলে হয়তো টাকার অভাবে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে পারতোনা। কিন্তু এখন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত জীবনের স্বপ্ন এখন তাদের চোখে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নে আমরা আর বোঝা হয়ে থাকবো না এবং প্রতিযোগিতার বর্তমান যুগে নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করবেন বলে জানান তারা। তাই তারা সুইজারল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এসডিসি), ব্র‍্যাক এবং হেলপ কক্সবাজার এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে হেলপ কক্সবাজার’র এসডিসি প্রকল্পের ফোকাল পার্সন মোঃ সাদেকুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মোঃ মঈনুল ইসলাম মুবিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এসডিসি)র অর্থায়নে ব্রাকের কারিগরি সহযোগিতা এবং হেলপ কক্সবাজার এর বাস্তবায়নে স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম(এসডিসি) প্রকল্প উখিয়া এবং রামু উপজেলায় কাজ করে যাচ্ছে।

প্রকল্পসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, স্থানীয়করণ, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা এবং তাদের সচেতনতার বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষকর্মী হিসেবে গড়ে তুলে তাদের কর্মমুখী করা।

হেলপ কক্সবাজার’র সহযোগিতায় দীপ্ত জাগরণ সংসদের করোনা টিকার ফ্রি নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ

মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজারের সহযোগিতায় প্রযুক্তির বাইরে থাকা সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন সেবার আওতায় আনতে বিনামূল্যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও মাস্ক বিতরণ করছে জালিয়াপালং এর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দীপ্ত জাগরণ সংসদ।

আজ ২৭ আগস্ট (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর উপজেলার জালিয়াপালং ৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পাঠুয়ারটেক জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে উক্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত জাগরণ সংসদের উপদেষ্টা মোঃ শাহাব উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ আজিজুল ইসলাম, হাফেজ শামসুল আলম ও অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাশেম উপস্থিত সকলকে ছোঁয়াচে রোগ থেকে মুক্ত থাকার বিভিন্ন কৌশল ও সর্বদা সরকারের বিধি-নিষেধ মেনে চলার অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়া করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ নেই। তাই সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি উখিয়ায় এ পর্যন্ত যারাই টিকা গ্রহণ করেছেন তারা বেশিরভাগই সচ্ছল ও প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখেন। কিন্তু প্রযুক্তির বাইরে থাকা মানুষদের এখনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অনেক মানুষের কাছে টিকা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নিয়ে জটিলতার কথা বলছেন।

এ অবস্থায় তাদের জটিলতা কমাতে বিনামূল্যে দীপ্ত জাগরণ সংসদ এই সেবামূলক কার্যক্রম চালু করেছে। তাদের এই মহৎ কাজে হেলপ কক্সবাজার সবসময় পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।

উদ্বোধক মোঃ শাহাব উদ্দিন ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন ও গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন এবং যে কোন ভোগান্তিতে ও জনকল্যাণমূলক সেবায় এগিয়ে যাওয়ায় দীপ্ত জাগরন সংসদ পরিবারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

দীপ্ত জাগরণ সংসদের সভাপতি এরফানুল করিম (ইরফান) এর নেতৃত্বে উক্ত ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন অত্র ওয়ার্ডের ছাত্রসংগঠন একতাবদ্ধ ছাত্রসমাজের সভাপতি মোবারক আলী ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ, অর্থ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রিদ্ওয়ান, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান, কার্যকরী সদস্য ওসমান সরওয়ার, নুরুল আবসার, তকিউর রহমান প্রমূখ।

পাঠুয়ারটেক এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষের ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও জুমার নামাজে আগত মুসল্লী এবং কলার আড়তে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে মাস্ক বিতরণের মাধ্যমে উক্ত কার্যক্রম আজকের জন্য সমাপ্তি করা হয়।

উল্লেখ্য, এই ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি অত্র ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে সপ্তাহব্যাপী পরিচালনা করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল দুপুর ২ টায় উক্ত ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম দীপ্ত জাগরণ সংসদের অফিসে অনুষ্ঠিত হবে। ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহী জনসাধারণ কে উল্লেখিত সময়ে নিবন্ধন স্থানে চলে আসার জন্য দীপ্ত জাগরণ সংসদ এর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক •

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় জালিয়াপালং ইউনিয়নের যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণ এবং অত্র ইউনিয়নের অতিদরিদ্র পরিবারের জীবিকায়নের জন্য দ্রুত আয় নিয়ে পরিচালিত কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

রবিবার ও সোমবার দিনব্যাপী তিনি জালিয়াপালং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, হাঁস-মুরগি পালন, জাল বুনন, ক্ষুদ্র দোকান, মাছের ব্যবসা, সেলাই কাজ এবং স্থানীয় যুব সংগঠন জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের মুরগী পালন পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারী-পুরুষ এবং ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের বাড়ির আঙিনায় পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে পুষ্টিহীনতা দ‍ূর করতে কাজ করছেন এবং সেলাই কাজ, জাল বুনন, মাছের ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের চেষ্টা ও আয় দেখে তিনি অভিভ‍ূত।

এসময় তিনি কাজের অগ্রগতি, স্থায়ীত্বশীলতা, ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও প্রকল্পের উপকারভোগীদের বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন এবং যে কোন ধরনের সমস্যায় সমাধানে মাঠ কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ প্রদান করেন।

উক্ত প্রকল্পের উপকারভোগীদের একজন প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের অধীনে ব্যবসার জন্য উপকরণ পেয়ে নতুনভানে মাছ ব্যবসায় শুরু করেন। এখন তিনি নতুনভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। তার অবস্থা এখন অনেক ভালো। এভাবে হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক উপকরণ সহায়তা পেয়ে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছেন অন্যরাও।

প্রকল্পের উপকারভোগী এক নারী বলেন, হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় মুরগী পেয়ে তিনি মুরগী থেকে নিয়মিত ডিম পাচ্ছেন এবং তা বিক্রি করে আয় করছেন। এতে তার সাংসারিক খরচে জোগান দিতে পারছেন।

স্থানীয় যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে মুরগী পালনের জন্য নির্বাচিত জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং দীপ্ত জাগরণ সংসদের সদস্যরা বলেন, হেলপ কক্সবাজার’র মাধ্যমে মুরগী পালনের প্রকল্প পেয়ে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন এখন তাদের চোখে। উৎপাদনমুখী কাজের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এখন আর বোঝা নয়, সম্পদ।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রাপ্ত মুরগীকে পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে বিক্রি করে পূণরায় আরও বেশী মুরগী কিনে খামার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং মুরগির খামারের লাভের অংশ থেকে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবো এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়াবো।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে হেলপ কক্সবাজার’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ান এইডের অর্থায়নে ব্র‍্যাকের কারিগরি সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প জালিয়াপালং ও রাজাপালং ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রকল্পসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, স্থানীয়করণ, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার মাধ্যমে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সচেতনতার মাধ্যমে বসতবাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন ও মাছ চাষের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা,পুষ্টি চাহিদা পূরণ, বাড়তি আয়ের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং স্থানীয় যুব ক্লাবকে শক্তিশালীকরণ করার মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করতে মুরগীর খামার ও মাছ চাষের প্রজেক্টের মাধ্যমে আয় ও তাদের কর্মমুখী করতে কাজ করে যাচ্ছে।

হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালন

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্টান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণ ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ছিলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকার উৎখাত নতুন কোনো বিষয় নয়, কিন্তু একটি দেশের জন্মদাতা, যিনি জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃত, তারই বিশ্বস্ত কিছু মানুষ গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বপরিবারে তাঁকে হত্যা করবে এমনটা কখনো হয়নি। স্বাধীন দেশের জন্মদাতাকে হত্যা করা মানে সে দেশটিকে হত্যা করা, সে দেশের ইতিহাসকে হত্যা করা, যা ৭৫ এর ঘাতকরা চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেহেতু একটি আদর্শ অনুভূতির নাম, তাই ঘাতকরা তাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে সফল হয়নি, কেননা আদর্শকে কখনো হত্যা করা যায় না। বঙ্গবন্ধুর বড় দুর্বলতা ছিল তিনি সবাইকে বিশ্বাস করেছেন। তার আস্থা ছিল, এই লোকগুলো কখনো তার কোনো ক্ষতি করবে না। অথচ এই আস্থার মূল্য সেই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে জীবন দিতে হলো। এরচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায় আর কিছু নেই।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হেলপ কক্সবাজার’র সকল কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিশ্ব শরনার্থী দিবস উপলক্ষে হেলপ কক্সবাজার’র আলোচনা সভা

২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ। বিশ্বের দেশে দেশ ছড়িয়ে থাকা শরনার্থীদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘আমরা একসঙ্গে কষ্ট উপশম করি, শিখি এবং জীবনকে দীপ্তিময় করি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংস্থার নিবার্হী পরিচালক আবুল কাশেম’র সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সংস্থার সকল স্তরের সহকর্মী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

উক্ত আলোচনা সভায় আলোচকবৃন্দরা বলেন, প্রায় চার বছর আগ প্রাণ বাঁচাত সাড় সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদশে আশ্রয় নযে়। বাংলাদশেরে সঙ্গ প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও রাখাইনের পরিবেশেের উন্নতি মিয়ানমার কোনো পদক্ষপে নেইনি।

তার ফলে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় নিজেদের আদি নিবাসে ফেরত যেতে রাজি হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনরে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হলেও রোহিঙ্গাদের একজন কেও রাখাইন ফেরত পাঠানো যায়নি।

আমরা আমাদের ছোট পরিসর থেকে সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ইউএন এজেন্সিসহ সাংবাদিক সমাজকে বিশেষভাবে অনুরোধ করব, অতীতের চেয়ে আরো জোরালো ও কার্যকরি ভুমিকা রাখতে, যাতে করে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির একটি সম্মানজনক প্রত্যাবাসনকে আশু নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

এসময় আলোচকবৃন্দ আরো বলেন, বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষরে সংখ্যা আট কোটি ২৪ লাখ এবং শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে থাকা মানুষের ৭০ শতাংশের উৎস পাঁচ দেশে।

এই পাঁচ দেশের মধ্যে সিরিয়া থেকে ৬৮ লাখ, ভেনেজুয়েলা থেকে ৪৯ লাখ, আফগানিস্তান থেকে ২৮ লাখ, দক্ষিণ সুদান থেকে ২২ লাখ এবং মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ মানুষ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন। এই হিসাব ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সভ্যতার এ পর্যায়ে এসেও নারী-শিশু সহ কোটি-কোটি মানুষ হত্যা,নিপীড়ন, পাশবিক নির্যাতন সহ প্রচন্ড অমানবিক আচরনের শিকার হয়ে জন্মভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হবে , এটি মানব সভ্যতার জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।

তাই এই কলংক মোচনের জন্য বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোকে প্রকৃত অর্থে দায়িত্বশীল ভুমিকায় নিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো মানবিক ও সোচ্চার ভুমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।

পরিবেশ-প্রকৃতি সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

আবদুল্লাহ আল আজিজ •

বক্তব্য রাখছেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গিকার’। প্রতিপাদ্যের গুরুত্ব এবং পরিবেশের তাৎপর্য নিয়ে উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে অনুুষ্ঠিত হয় “বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১” শীর্ষক এক আলোচনা সভা।

হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার শাকিল আহমদ, ম্যানেজার অপারেশন এন্ড কমিউনিকেশন কেএম মহসিনউজ্জামান, প্রজেক্ট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান, সিভেক প্রজেক্ট ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম, মনিটরিং অফিসার মধু বড়ুয়া, এডমিন এন্ড ফাইন্যান্স অফিসার মোঃ ইউসুফ, এইচ আর অফিসার তারেক মাহমুদুল, মোঃ মুবিন, মোঃ মোশাররফ, ফিল্ড অফিসার সাইফুল ইসলাম, মাএখিন রাখাইন, তাজনোভা রিয়া সানি, প্রদত্ত বড়ুয়া, সিডিও জেসমিন আক্তার প্রমুখ।

এসময় হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। অধিক গাছপালা কাটার ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। কক্সবাজার জেলায় প্রায় ২৪ লাখ মানুষের পাশাপাশি উখিয়া টেকনাফে ১০ লক্ষের ও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ রয়েছে। যার ফলে কক্সবাজারে পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। তাছাড়া রোহিঙ্গা আসার ফলে উখিয়া এবং টেকনাফের মোট ১৭৬ হেক্টর আবাদি জমি দখল হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ লক্ষ জনগোষ্ঠীর প্রতিদিনের মানবসৃষ্ট ও প্লাস্টিক বর্জ্যরে কারনে মোট ৯৩ হেক্টর জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চাষের অযোগ্য জমি গুলোকে চাষযোগ্য করে তুলতে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে প্রতিদিন টন টন প্লাষ্টিকের বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। বর্ষার সময় এসব বর্জ্য গিয়ে মিশছে সাগরে, নদীতে এবং মাটিতে। প্লাষ্টিক বর্জ্যরে কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে, নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। এছাড়া রোহিঙ্গা প্রতিদিন তৈরি করছে টন টন প্লাস্টিক বর্জ্য যা স্থানীয় পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

মানুষের টিকে থাকার জন্য এই পৃথিবী দরকার, কিন্তু পৃথিবীর টিকে থাকার জন্য মানুষের দরকার নাই। পৃথিবীতে বহু প্রাণী এসেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু পৃথিবী টিকে আছে। মানুষও যদি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কিছু যায় আসে না। যেভাবে আমরা পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি প্রকারান্তরে আমরা আমাদের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করছি, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। সুতরাং আমাদের নিজের প্রয়োজনেই পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।

উক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, ইটভাটা, তামাক চাষ, ময়লা আবর্জনা পুড়ানো, রাস্তায় রাস্তায় ময়লা আবর্জনা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে কক্সবাজারে বায়ু দূষণের প্রভাব বেশি। এছাড়া পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, নদী ভরাট, সমুদ্র সৈকত দখল, জীববৈচিত্য ধ্বংস, প্যারাবন কাটাসহ নানাকারনে দেশে সবচেয়ে বেশি পরিবেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার। এ অবস্থা থেকে রেহায় পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ পরিবেশবাদীদের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণে শিশুদের মেধা ও বুদ্ধিমত্তা হ্রাসের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় শিশু মৃত্যুর হার, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, পৃথিবী ও মানব জাতির বিপর্যয়ের সবচেয়ে নিকটবর্তী কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্টরা আশু পদক্ষেপ না নিলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই মানুষ মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।