উখিয়ায় হেলপ কক্সবাজারের ডিজ্যাবিলিটি সেন্টার পরিদর্শনে অস্ট্রেলিয়ান দুতাবাসের কর্মকর্তারা

উখিয়ায় ডিজ্যাবিলিটি সেন্টারের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন অস্ট্রেলিয়ান দুতাবাসের কর্মকর্তারা।

ব্রাকের সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজারের উদ্যোগে গড়ে উঠা ডিজ্যাবিলিটি লিডারশীপ লার্নিং সেন্টার এর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ডিএফএটি (অস্ট্রেলিয়ান এইড) এর প্রতিনিধি এমি সেরিডান ও আন্না ল্যামিং।

এসময় তারা ডিজেবিলিটি লিডারশীপ লার্নিং সেন্টারের কার্যক্রম দেখেন ও প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষদের সাথে খোলামেলা আলাপ করেন এবং তাদের নানান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের কথা শুনেন।

এসময় ব্রাকের ডিরেক্টর (হিউম্যানিটিরিয়ান প্রোগ্রাম) সাজেদুল হাসান, এরিয়া ডিরেক্টর হাসিনা আখতার হক, হেড অব হোষ্ট কমিউনিটি প্রোগ্রাম আব্দুল মতিন সরদার, হেলপ কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম, জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী, উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস.এম আনোয়ার হোসাইন, ডিজেবিলিটি লিডারশীপ লার্নিং সেন্টারের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জমির আহমদ, হেলপ কক্সবাজার এর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার এস এম জুনায়েদ, প্রজেক্ট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান, ফিল্ড অফিসার মাএখিন রাখাইন উপস্থিত ছিলেন।কক্সবাজার পোস্ট.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কর্মক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য উখিয়ার নারীদের

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ হেলপ কক্সবাজার উখিয়ার একমাত্র বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা। ২০০১ সাল থেকে দরিদ্রতার কারণে পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন আর্থসামাজিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে জালিয়াপালং ইউনিয়নে নারীদের নেতৃত্ব উন্নয়নসহ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জেন্ডার বৈষম্য হ্রাস, স্থানীয় সম্পদ সমূহের সুষ্ঠু ব্যবহারে প্রধান্য দেয়া হয়েছে। নারী নির্যাতন, পারিবারিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক প্রথা বন্ধ,পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে গ্রামীণ মহিলারা আগ্রহসহকারে কাজ করছে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সেবা এবং সেবাপ্রদানকারী সংস্থা সমূহ হতে সুযোগ ও প্রাপ্ত সেবা সমূহ নেয়া এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী কাঠামো গুলোতে নারীর প্রবেশাধিকার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে হেলপ কক্সবাজার সংস্থাটি।

এছাড়াও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠন, বিনামূল্যে আইন সহায়তা সেবা সর্ম্পকে ধারনা প্রদান,পারিবারিক বিরোধ নিরসনে স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যক্রমও সভা করছে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতামুলক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জালিয়াপালং ৯টি ওয়ার্ডে পারিবারিক সহিংসতার ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য মহিলা, কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে ৬০টি উঠান বৈঠক আয়োজন করা হয়। ওই উঠান বৈঠকগুলোতে এলাকার মহিলারা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহন করেন। বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন আইন, যৌতুক, বিবাহ চুক্তি ও পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে সচেতন হয়ে সমাজের পুরাতন ধারনাগুলোর বিপরীতে তাদের নতুন ধারণা পেশ করেন। তারা স্ব-স্ব অবস্থানে বাল্যবিয়ে না দেয়া ও যৌতুক আদান প্রদান না করার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন। উঠান বৈঠকে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে অংশগ্রহণকারীরা সমাজে নারী পুরুষের বৈষম্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা লাভ করে এবং এর ফলে সহিংসতা কিভাবে সৃষ্টি হয় তা জানতে পেরে করনীয় সম্পর্কে সচেতন হয়। তারা পিতৃতন্ত্র এর ক্ষতিকর প্রভাব সর্ম্পকে এবং নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ক্ষেত্র সর্ম্পকে ওধারনা লাভ করেন। এতে অংশগ্রহণকারীগণ সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তারা নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।

হেলপ কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে নারীর জীবনমানে অকল্পনীয় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এই সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা তো কমেইনি- বরং নিত্যনতুন কৌশল ও পন্থায় নারীর প্রতি পাশবিকতা এবং নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে এগিয়ে যাওয়া বা অধিকার বুঝে নেয়ার লড়াইয়ে বিগত দুই দশকে দেশের নারীরা দারুণ এগিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে অনেকেই অর্জন করছেন ঈর্ষণীয় সাফল্য। তবে শত সাফল্য ও প্রশংসার গল্প থাকলেও নারী নির্যাতন বা জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার ইস্যুতে এখনও কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

তাই পারিবারিক সহিংসতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এবং সমাজে নৈতিকতা ও অনৈতিকতা চিহ্নিত করার জন্য এধরনের কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

নির্যাতিত নারীদের সেবা নিশ্চিত করতে, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সম্প্রীতি বজায় রেখে সোহার্দ্ধপূর্ণ পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে হেলপ। তিনি আশা করে বলেন, এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপদাপন্ন নারী উপকৃত হন এবং এখানে অর্জিত অভিজ্ঞতা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে। এতে নির্যাতিত নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার সর্ম্পকে সচেতন হয়।