হেলপ কক্সবাজার’র সহযোগিতায় দীপ্ত জাগরণ সংসদের করোনা টিকার ফ্রি নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ

মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজারের সহযোগিতায় প্রযুক্তির বাইরে থাকা সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন সেবার আওতায় আনতে বিনামূল্যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও মাস্ক বিতরণ করছে জালিয়াপালং এর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দীপ্ত জাগরণ সংসদ।

আজ ২৭ আগস্ট (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর উপজেলার জালিয়াপালং ৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পাঠুয়ারটেক জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে উক্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত জাগরণ সংসদের উপদেষ্টা মোঃ শাহাব উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ আজিজুল ইসলাম, হাফেজ শামসুল আলম ও অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাশেম উপস্থিত সকলকে ছোঁয়াচে রোগ থেকে মুক্ত থাকার বিভিন্ন কৌশল ও সর্বদা সরকারের বিধি-নিষেধ মেনে চলার অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়া করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ নেই। তাই সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি উখিয়ায় এ পর্যন্ত যারাই টিকা গ্রহণ করেছেন তারা বেশিরভাগই সচ্ছল ও প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখেন। কিন্তু প্রযুক্তির বাইরে থাকা মানুষদের এখনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অনেক মানুষের কাছে টিকা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নিয়ে জটিলতার কথা বলছেন।

এ অবস্থায় তাদের জটিলতা কমাতে বিনামূল্যে দীপ্ত জাগরণ সংসদ এই সেবামূলক কার্যক্রম চালু করেছে। তাদের এই মহৎ কাজে হেলপ কক্সবাজার সবসময় পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।

উদ্বোধক মোঃ শাহাব উদ্দিন ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন ও গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন এবং যে কোন ভোগান্তিতে ও জনকল্যাণমূলক সেবায় এগিয়ে যাওয়ায় দীপ্ত জাগরন সংসদ পরিবারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

দীপ্ত জাগরণ সংসদের সভাপতি এরফানুল করিম (ইরফান) এর নেতৃত্বে উক্ত ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন অত্র ওয়ার্ডের ছাত্রসংগঠন একতাবদ্ধ ছাত্রসমাজের সভাপতি মোবারক আলী ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ, অর্থ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রিদ্ওয়ান, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান, কার্যকরী সদস্য ওসমান সরওয়ার, নুরুল আবসার, তকিউর রহমান প্রমূখ।

পাঠুয়ারটেক এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষের ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও জুমার নামাজে আগত মুসল্লী এবং কলার আড়তে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে মাস্ক বিতরণের মাধ্যমে উক্ত কার্যক্রম আজকের জন্য সমাপ্তি করা হয়।

উল্লেখ্য, এই ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি অত্র ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে সপ্তাহব্যাপী পরিচালনা করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল দুপুর ২ টায় উক্ত ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম দীপ্ত জাগরণ সংসদের অফিসে অনুষ্ঠিত হবে। ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহী জনসাধারণ কে উল্লেখিত সময়ে নিবন্ধন স্থানে চলে আসার জন্য দীপ্ত জাগরণ সংসদ এর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক •

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় জালিয়াপালং ইউনিয়নের যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণ এবং অত্র ইউনিয়নের অতিদরিদ্র পরিবারের জীবিকায়নের জন্য দ্রুত আয় নিয়ে পরিচালিত কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

রবিবার ও সোমবার দিনব্যাপী তিনি জালিয়াপালং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, হাঁস-মুরগি পালন, জাল বুনন, ক্ষুদ্র দোকান, মাছের ব্যবসা, সেলাই কাজ এবং স্থানীয় যুব সংগঠন জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের মুরগী পালন পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারী-পুরুষ এবং ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের বাড়ির আঙিনায় পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে পুষ্টিহীনতা দ‍ূর করতে কাজ করছেন এবং সেলাই কাজ, জাল বুনন, মাছের ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের চেষ্টা ও আয় দেখে তিনি অভিভ‍ূত।

এসময় তিনি কাজের অগ্রগতি, স্থায়ীত্বশীলতা, ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও প্রকল্পের উপকারভোগীদের বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন এবং যে কোন ধরনের সমস্যায় সমাধানে মাঠ কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ প্রদান করেন।

উক্ত প্রকল্পের উপকারভোগীদের একজন প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের অধীনে ব্যবসার জন্য উপকরণ পেয়ে নতুনভানে মাছ ব্যবসায় শুরু করেন। এখন তিনি নতুনভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। তার অবস্থা এখন অনেক ভালো। এভাবে হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক উপকরণ সহায়তা পেয়ে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছেন অন্যরাও।

প্রকল্পের উপকারভোগী এক নারী বলেন, হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় মুরগী পেয়ে তিনি মুরগী থেকে নিয়মিত ডিম পাচ্ছেন এবং তা বিক্রি করে আয় করছেন। এতে তার সাংসারিক খরচে জোগান দিতে পারছেন।

স্থানীয় যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে মুরগী পালনের জন্য নির্বাচিত জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং দীপ্ত জাগরণ সংসদের সদস্যরা বলেন, হেলপ কক্সবাজার’র মাধ্যমে মুরগী পালনের প্রকল্প পেয়ে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন এখন তাদের চোখে। উৎপাদনমুখী কাজের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এখন আর বোঝা নয়, সম্পদ।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রাপ্ত মুরগীকে পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে বিক্রি করে পূণরায় আরও বেশী মুরগী কিনে খামার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং মুরগির খামারের লাভের অংশ থেকে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবো এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়াবো।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে হেলপ কক্সবাজার’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ান এইডের অর্থায়নে ব্র‍্যাকের কারিগরি সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প জালিয়াপালং ও রাজাপালং ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রকল্পসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, স্থানীয়করণ, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার মাধ্যমে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সচেতনতার মাধ্যমে বসতবাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন ও মাছ চাষের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা,পুষ্টি চাহিদা পূরণ, বাড়তি আয়ের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং স্থানীয় যুব ক্লাবকে শক্তিশালীকরণ করার মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করতে মুরগীর খামার ও মাছ চাষের প্রজেক্টের মাধ্যমে আয় ও তাদের কর্মমুখী করতে কাজ করে যাচ্ছে।

হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালন

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্টান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণ ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ছিলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকার উৎখাত নতুন কোনো বিষয় নয়, কিন্তু একটি দেশের জন্মদাতা, যিনি জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃত, তারই বিশ্বস্ত কিছু মানুষ গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বপরিবারে তাঁকে হত্যা করবে এমনটা কখনো হয়নি। স্বাধীন দেশের জন্মদাতাকে হত্যা করা মানে সে দেশটিকে হত্যা করা, সে দেশের ইতিহাসকে হত্যা করা, যা ৭৫ এর ঘাতকরা চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেহেতু একটি আদর্শ অনুভূতির নাম, তাই ঘাতকরা তাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে সফল হয়নি, কেননা আদর্শকে কখনো হত্যা করা যায় না। বঙ্গবন্ধুর বড় দুর্বলতা ছিল তিনি সবাইকে বিশ্বাস করেছেন। তার আস্থা ছিল, এই লোকগুলো কখনো তার কোনো ক্ষতি করবে না। অথচ এই আস্থার মূল্য সেই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে জীবন দিতে হলো। এরচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায় আর কিছু নেই।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হেলপ কক্সবাজার’র সকল কর্মকর্তাবৃন্দ।