মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক •

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় জালিয়াপালং ইউনিয়নের যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণ এবং অত্র ইউনিয়নের অতিদরিদ্র পরিবারের জীবিকায়নের জন্য দ্রুত আয় নিয়ে পরিচালিত কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

রবিবার ও সোমবার দিনব্যাপী তিনি জালিয়াপালং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, হাঁস-মুরগি পালন, জাল বুনন, ক্ষুদ্র দোকান, মাছের ব্যবসা, সেলাই কাজ এবং স্থানীয় যুব সংগঠন জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের মুরগী পালন পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারী-পুরুষ এবং ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের বাড়ির আঙিনায় পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে পুষ্টিহীনতা দ‍ূর করতে কাজ করছেন এবং সেলাই কাজ, জাল বুনন, মাছের ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের চেষ্টা ও আয় দেখে তিনি অভিভ‍ূত।

এসময় তিনি কাজের অগ্রগতি, স্থায়ীত্বশীলতা, ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও প্রকল্পের উপকারভোগীদের বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন এবং যে কোন ধরনের সমস্যায় সমাধানে মাঠ কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ প্রদান করেন।

উক্ত প্রকল্পের উপকারভোগীদের একজন প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের অধীনে ব্যবসার জন্য উপকরণ পেয়ে নতুনভানে মাছ ব্যবসায় শুরু করেন। এখন তিনি নতুনভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। তার অবস্থা এখন অনেক ভালো। এভাবে হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক উপকরণ সহায়তা পেয়ে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছেন অন্যরাও।

প্রকল্পের উপকারভোগী এক নারী বলেন, হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় মুরগী পেয়ে তিনি মুরগী থেকে নিয়মিত ডিম পাচ্ছেন এবং তা বিক্রি করে আয় করছেন। এতে তার সাংসারিক খরচে জোগান দিতে পারছেন।

স্থানীয় যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে মুরগী পালনের জন্য নির্বাচিত জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং দীপ্ত জাগরণ সংসদের সদস্যরা বলেন, হেলপ কক্সবাজার’র মাধ্যমে মুরগী পালনের প্রকল্প পেয়ে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন এখন তাদের চোখে। উৎপাদনমুখী কাজের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এখন আর বোঝা নয়, সম্পদ।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রাপ্ত মুরগীকে পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে বিক্রি করে পূণরায় আরও বেশী মুরগী কিনে খামার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং মুরগির খামারের লাভের অংশ থেকে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবো এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়াবো।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে হেলপ কক্সবাজার’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ান এইডের অর্থায়নে ব্র‍্যাকের কারিগরি সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প জালিয়াপালং ও রাজাপালং ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রকল্পসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, স্থানীয়করণ, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার মাধ্যমে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সচেতনতার মাধ্যমে বসতবাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন ও মাছ চাষের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা,পুষ্টি চাহিদা পূরণ, বাড়তি আয়ের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং স্থানীয় যুব ক্লাবকে শক্তিশালীকরণ করার মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করতে মুরগীর খামার ও মাছ চাষের প্রজেক্টের মাধ্যমে আয় ও তাদের কর্মমুখী করতে কাজ করে যাচ্ছে।