মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক •

উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় জালিয়াপালং ইউনিয়নের যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণ এবং অত্র ইউনিয়নের অতিদরিদ্র পরিবারের জীবিকায়নের জন্য দ্রুত আয় নিয়ে পরিচালিত কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম।

রবিবার ও সোমবার দিনব্যাপী তিনি জালিয়াপালং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, হাঁস-মুরগি পালন, জাল বুনন, ক্ষুদ্র দোকান, মাছের ব্যবসা, সেলাই কাজ এবং স্থানীয় যুব সংগঠন জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ও দীপ্ত জাগরণ সংসদের মুরগী পালন পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারী-পুরুষ এবং ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের বাড়ির আঙিনায় পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে পুষ্টিহীনতা দ‍ূর করতে কাজ করছেন এবং সেলাই কাজ, জাল বুনন, মাছের ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের চেষ্টা ও আয় দেখে তিনি অভিভ‍ূত।

এসময় তিনি কাজের অগ্রগতি, স্থায়ীত্বশীলতা, ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও প্রকল্পের উপকারভোগীদের বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন এবং যে কোন ধরনের সমস্যায় সমাধানে মাঠ কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ প্রদান করেন।

উক্ত প্রকল্পের উপকারভোগীদের একজন প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের অধীনে ব্যবসার জন্য উপকরণ পেয়ে নতুনভানে মাছ ব্যবসায় শুরু করেন। এখন তিনি নতুনভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। তার অবস্থা এখন অনেক ভালো। এভাবে হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক উপকরণ সহায়তা পেয়ে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছেন অন্যরাও।

প্রকল্পের উপকারভোগী এক নারী বলেন, হেলপ কক্সবাজার এর সহায়তায় মুরগী পেয়ে তিনি মুরগী থেকে নিয়মিত ডিম পাচ্ছেন এবং তা বিক্রি করে আয় করছেন। এতে তার সাংসারিক খরচে জোগান দিতে পারছেন।

স্থানীয় যুব ক্লাবকে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে মুরগী পালনের জন্য নির্বাচিত জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং দীপ্ত জাগরণ সংসদের সদস্যরা বলেন, হেলপ কক্সবাজার’র মাধ্যমে মুরগী পালনের প্রকল্প পেয়ে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন এখন তাদের চোখে। উৎপাদনমুখী কাজের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এখন আর বোঝা নয়, সম্পদ।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রাপ্ত মুরগীকে পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে বিক্রি করে পূণরায় আরও বেশী মুরগী কিনে খামার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং মুরগির খামারের লাভের অংশ থেকে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবো এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়াবো।

মাঠ পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে হেলপ কক্সবাজার’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ান এইডের অর্থায়নে ব্র‍্যাকের কারিগরি সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প জালিয়াপালং ও রাজাপালং ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রকল্পসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, স্থানীয়করণ, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার মাধ্যমে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সচেতনতার মাধ্যমে বসতবাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন ও মাছ চাষের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা,পুষ্টি চাহিদা পূরণ, বাড়তি আয়ের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং স্থানীয় যুব ক্লাবকে শক্তিশালীকরণ করার মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করতে মুরগীর খামার ও মাছ চাষের প্রজেক্টের মাধ্যমে আয় ও তাদের কর্মমুখী করতে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশ্ব শরনার্থী দিবস উপলক্ষে হেলপ কক্সবাজার’র আলোচনা সভা

২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ। বিশ্বের দেশে দেশ ছড়িয়ে থাকা শরনার্থীদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘আমরা একসঙ্গে কষ্ট উপশম করি, শিখি এবং জীবনকে দীপ্তিময় করি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার কর্তৃক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংস্থার নিবার্হী পরিচালক আবুল কাশেম’র সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সংস্থার সকল স্তরের সহকর্মী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

উক্ত আলোচনা সভায় আলোচকবৃন্দরা বলেন, প্রায় চার বছর আগ প্রাণ বাঁচাত সাড় সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদশে আশ্রয় নযে়। বাংলাদশেরে সঙ্গ প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও রাখাইনের পরিবেশেের উন্নতি মিয়ানমার কোনো পদক্ষপে নেইনি।

তার ফলে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় নিজেদের আদি নিবাসে ফেরত যেতে রাজি হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনরে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হলেও রোহিঙ্গাদের একজন কেও রাখাইন ফেরত পাঠানো যায়নি।

আমরা আমাদের ছোট পরিসর থেকে সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ইউএন এজেন্সিসহ সাংবাদিক সমাজকে বিশেষভাবে অনুরোধ করব, অতীতের চেয়ে আরো জোরালো ও কার্যকরি ভুমিকা রাখতে, যাতে করে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির একটি সম্মানজনক প্রত্যাবাসনকে আশু নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

এসময় আলোচকবৃন্দ আরো বলেন, বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষরে সংখ্যা আট কোটি ২৪ লাখ এবং শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে থাকা মানুষের ৭০ শতাংশের উৎস পাঁচ দেশে।

এই পাঁচ দেশের মধ্যে সিরিয়া থেকে ৬৮ লাখ, ভেনেজুয়েলা থেকে ৪৯ লাখ, আফগানিস্তান থেকে ২৮ লাখ, দক্ষিণ সুদান থেকে ২২ লাখ এবং মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ মানুষ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন। এই হিসাব ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সভ্যতার এ পর্যায়ে এসেও নারী-শিশু সহ কোটি-কোটি মানুষ হত্যা,নিপীড়ন, পাশবিক নির্যাতন সহ প্রচন্ড অমানবিক আচরনের শিকার হয়ে জন্মভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হবে , এটি মানব সভ্যতার জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।

তাই এই কলংক মোচনের জন্য বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোকে প্রকৃত অর্থে দায়িত্বশীল ভুমিকায় নিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো মানবিক ও সোচ্চার ভুমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।

পরিবেশ-প্রকৃতি সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

আবদুল্লাহ আল আজিজ •

বক্তব্য রাখছেন হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গিকার’। প্রতিপাদ্যের গুরুত্ব এবং পরিবেশের তাৎপর্য নিয়ে উখিয়ার একমাত্র বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে অনুুষ্ঠিত হয় “বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১” শীর্ষক এক আলোচনা সভা।

হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার শাকিল আহমদ, ম্যানেজার অপারেশন এন্ড কমিউনিকেশন কেএম মহসিনউজ্জামান, প্রজেক্ট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান, সিভেক প্রজেক্ট ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম, মনিটরিং অফিসার মধু বড়ুয়া, এডমিন এন্ড ফাইন্যান্স অফিসার মোঃ ইউসুফ, এইচ আর অফিসার তারেক মাহমুদুল, মোঃ মুবিন, মোঃ মোশাররফ, ফিল্ড অফিসার সাইফুল ইসলাম, মাএখিন রাখাইন, তাজনোভা রিয়া সানি, প্রদত্ত বড়ুয়া, সিডিও জেসমিন আক্তার প্রমুখ।

এসময় হেলপ কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। অধিক গাছপালা কাটার ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। কক্সবাজার জেলায় প্রায় ২৪ লাখ মানুষের পাশাপাশি উখিয়া টেকনাফে ১০ লক্ষের ও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ রয়েছে। যার ফলে কক্সবাজারে পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। তাছাড়া রোহিঙ্গা আসার ফলে উখিয়া এবং টেকনাফের মোট ১৭৬ হেক্টর আবাদি জমি দখল হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ লক্ষ জনগোষ্ঠীর প্রতিদিনের মানবসৃষ্ট ও প্লাস্টিক বর্জ্যরে কারনে মোট ৯৩ হেক্টর জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চাষের অযোগ্য জমি গুলোকে চাষযোগ্য করে তুলতে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে প্রতিদিন টন টন প্লাষ্টিকের বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। বর্ষার সময় এসব বর্জ্য গিয়ে মিশছে সাগরে, নদীতে এবং মাটিতে। প্লাষ্টিক বর্জ্যরে কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে, নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। এছাড়া রোহিঙ্গা প্রতিদিন তৈরি করছে টন টন প্লাস্টিক বর্জ্য যা স্থানীয় পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

মানুষের টিকে থাকার জন্য এই পৃথিবী দরকার, কিন্তু পৃথিবীর টিকে থাকার জন্য মানুষের দরকার নাই। পৃথিবীতে বহু প্রাণী এসেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু পৃথিবী টিকে আছে। মানুষও যদি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কিছু যায় আসে না। যেভাবে আমরা পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি প্রকারান্তরে আমরা আমাদের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করছি, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। সুতরাং আমাদের নিজের প্রয়োজনেই পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।

উক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, ইটভাটা, তামাক চাষ, ময়লা আবর্জনা পুড়ানো, রাস্তায় রাস্তায় ময়লা আবর্জনা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে কক্সবাজারে বায়ু দূষণের প্রভাব বেশি। এছাড়া পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, নদী ভরাট, সমুদ্র সৈকত দখল, জীববৈচিত্য ধ্বংস, প্যারাবন কাটাসহ নানাকারনে দেশে সবচেয়ে বেশি পরিবেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার। এ অবস্থা থেকে রেহায় পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ পরিবেশবাদীদের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণে শিশুদের মেধা ও বুদ্ধিমত্তা হ্রাসের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় শিশু মৃত্যুর হার, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, পৃথিবী ও মানব জাতির বিপর্যয়ের সবচেয়ে নিকটবর্তী কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্টরা আশু পদক্ষেপ না নিলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই মানুষ মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।

হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা


উখিয়ার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার’র কর্তৃক আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কোটবাজাস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

হেলপ কক্সবাজার’র ম্যানেজার অপারেশন এন্ড কমিউনিকেশন কে.এম মুহসিনুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে স্থানীয় এনজিও কক্সএইডের চেয়ারম্যান জিকে ধর এবং অন্যান্যদের মধ্যে স্থানীয় সিবিও প্রতিনিধি ও হেলপ কক্সবাজার’র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক, শিশুদের প্রতি গভীর মমতার বিষয়সহ তাঁদের শৈশব, পারিবারিক জীবন এবং স্কুল জীবনের বিভিন্ন ঘটনা ও দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে এবং ব্যক্তি-সমাজ ও জাতির সামষ্টিক উন্নয়নে শোষণ, বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত একটি সামাজিক কাঠামোর ওপর বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের ওপর আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বর্তমানকালেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’–এর সফল বাস্তবায়নে আজকের শিশুদেরকেই ভবিষ্যতে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।

আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

উখিয়ায় হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন

উখিয়ায় হেলপ কক্সবাজার’র উদ্যোগে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

৮মার্চ (সোমবার) সকাল ১০টায় হাসিমুখ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্টিত র‍্যালীতে উক্ত সংগঠনের নারী সদস্য, বিভিন্ন প্রতিষ্টানে কর্মজীবি মহিলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ অত্র এলাকার নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

র‍্যালী শেষে সোনারপাড়াস্থ হাসি মুখ ফাউন্ডেশনের অস্থায়ী অফিসে হেলপ কক্সবাজার’র ফিল্ড অফিসার মধু বড়ুয়ার সঞ্চালনায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন, হেলপ কক্সবাজার’র ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার এস এম জুনায়েদ চৌধুরী।

উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসিমুখ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা কক্সবাজার সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক জুয়েল মামুন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সদস্য ও জালিয়াপালং ইউনিয়নের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ন আহবায়ক আবুল কাশেম বাবুল, মাওলানা ঈসমাইল,হেলপ কক্সবাজার’র মনিটরিং অফিসার জিল্লুর রহমান, হাসিমুখ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সহ: সভাপতি জাহেদুল আলম।

উক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা নারী দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া ছেলেদেরকে নারীর অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকার আহবান করার পাশাপাশি নারীদের প্রতি তিরস্কার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয় এবং তিরস্কারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহবান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তবে জুয়েল মামুন বলেন, পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের এগিয়ে যেতে হবে, এক্ষেত্রে পুরুষদের অগ্রনীভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সবাইকে নারী সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবুল কাশেম বাবুল বলেন, শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বিশেষ দিন নয়। বছরের প্রত্যেকটি দিন নারী ও কন্যা শিশুদের সম্মান দিতে হবে।

বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, বিচারবিভাগ, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শান্তিরক্ষা মিশনসহ সর্বক্ষেত্রে নারীর সফল অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।”

এছাড়াও নারী দিবসে নারীর অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা, কবিতা আবৃত্তি, কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্ন নিয়ে বক্তব্য, নারীদের সাফল্য নিয়ে বক্তব্য প্রতিযোগিতা হয় এবং প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের পুরষ্কার এবং জীবনযুদ্ধে সফল নারীদের কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

এসময় হেলপ কক্সবাজার’র ফিল্ড অফিসার মধু বড়ুয়া, তাসনোভা রিয়া, মাহমুদুল হাসান তারেকসহ অত্র এলাকার নারী, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও সহযোগী সংগঠনের অনেক সদস্য অংশ নেন।Attachments area

কর্মক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য উখিয়ার নারীদের

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ হেলপ কক্সবাজার উখিয়ার একমাত্র বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা। ২০০১ সাল থেকে দরিদ্রতার কারণে পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন আর্থসামাজিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে জালিয়াপালং ইউনিয়নে নারীদের নেতৃত্ব উন্নয়নসহ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জেন্ডার বৈষম্য হ্রাস, স্থানীয় সম্পদ সমূহের সুষ্ঠু ব্যবহারে প্রধান্য দেয়া হয়েছে। নারী নির্যাতন, পারিবারিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক প্রথা বন্ধ,পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে গ্রামীণ মহিলারা আগ্রহসহকারে কাজ করছে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সেবা এবং সেবাপ্রদানকারী সংস্থা সমূহ হতে সুযোগ ও প্রাপ্ত সেবা সমূহ নেয়া এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী কাঠামো গুলোতে নারীর প্রবেশাধিকার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে হেলপ কক্সবাজার সংস্থাটি।

এছাড়াও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠন, বিনামূল্যে আইন সহায়তা সেবা সর্ম্পকে ধারনা প্রদান,পারিবারিক বিরোধ নিরসনে স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যক্রমও সভা করছে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতামুলক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জালিয়াপালং ৯টি ওয়ার্ডে পারিবারিক সহিংসতার ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য মহিলা, কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে ৬০টি উঠান বৈঠক আয়োজন করা হয়। ওই উঠান বৈঠকগুলোতে এলাকার মহিলারা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহন করেন। বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন আইন, যৌতুক, বিবাহ চুক্তি ও পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে সচেতন হয়ে সমাজের পুরাতন ধারনাগুলোর বিপরীতে তাদের নতুন ধারণা পেশ করেন। তারা স্ব-স্ব অবস্থানে বাল্যবিয়ে না দেয়া ও যৌতুক আদান প্রদান না করার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন। উঠান বৈঠকে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে অংশগ্রহণকারীরা সমাজে নারী পুরুষের বৈষম্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা লাভ করে এবং এর ফলে সহিংসতা কিভাবে সৃষ্টি হয় তা জানতে পেরে করনীয় সম্পর্কে সচেতন হয়। তারা পিতৃতন্ত্র এর ক্ষতিকর প্রভাব সর্ম্পকে এবং নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ক্ষেত্র সর্ম্পকে ওধারনা লাভ করেন। এতে অংশগ্রহণকারীগণ সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তারা নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।

হেলপ কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে নারীর জীবনমানে অকল্পনীয় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এই সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা তো কমেইনি- বরং নিত্যনতুন কৌশল ও পন্থায় নারীর প্রতি পাশবিকতা এবং নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে এগিয়ে যাওয়া বা অধিকার বুঝে নেয়ার লড়াইয়ে বিগত দুই দশকে দেশের নারীরা দারুণ এগিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে অনেকেই অর্জন করছেন ঈর্ষণীয় সাফল্য। তবে শত সাফল্য ও প্রশংসার গল্প থাকলেও নারী নির্যাতন বা জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার ইস্যুতে এখনও কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

তাই পারিবারিক সহিংসতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এবং সমাজে নৈতিকতা ও অনৈতিকতা চিহ্নিত করার জন্য এধরনের কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

নির্যাতিত নারীদের সেবা নিশ্চিত করতে, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সম্প্রীতি বজায় রেখে সোহার্দ্ধপূর্ণ পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে হেলপ। তিনি আশা করে বলেন, এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপদাপন্ন নারী উপকৃত হন এবং এখানে অর্জিত অভিজ্ঞতা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে। এতে নির্যাতিত নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার সর্ম্পকে সচেতন হয়।